বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেহেরপুরের বাজারে দাম না থাকায় কাঠাল এখন গবাদিপশুর খাদ‍্য 

  • মেহেরপুর প্রতিনিধি     
  • ২৬ জুলাই, ২০২৫ ১৩:১০

কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে জাতীয় রসালো ফল কাঠাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এবারে কাঠালের ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম না থাকায় গাছেই পেকে নষ্ট হচ্ছে কাঠাল। ব‍্যাবহৃত হচ্ছে গবাদিপশুর খাদ‍্য হিসেবে।

কৃষি বিভাগ বলছে স্থানীয় ভাবে বাজার সৃষ্টি করা গেলে এই সমস্য থাকবে না।

জেলার গ্রাম অঞ্চলের সড়কের দুপাশসহ বিভিন্ন এলাকার কাঠাল বাগানের প্রতিটি গাছেই ঝুলে আছে বড় বড় কাঠাল। স্থানীয় ভাবে বাজার না থাকায় এসব কাঠাল বিক্রি করতে পারছে না চাষিরা। চাহিদা না থাকাকে পুজি করে ভ্রাম্যমান কাঠাল ব্যবসায়ীরা কম দামে চাষিদের কাছ থেকে কিনছে এসব ছোট বড় কাঠাল।

স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, একটি ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের বড় আকারের প্রতিটি কাঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। অনেকে দাম না পেয়ে কাঠাল কেটে গরু ছাগলের খাবার হিসেবে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, গত বছর যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তাও বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে।

কৃষি বিভাগের তথ‍্য মতে জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমির কাঠাল বাগান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন।

জামাল হোসেন বলেন, আমার বাড়ির উঠানে থাকা একটি কাঠাল গাছে প্রায় শতাধিক কাঠাল ধরে ছিলো।যার মধ‍্যে আমি সাতটা কাঠাল শুরুর দিকে বিক্রি করে ছিলাম ২"শ ৫০ টাকা করে। আর বতর্মানে প্রতি পিচ কাঠালের দাম দিতে চাইছে ১৫ টাকা করে। তাই বিক্রি না করে কাঠাল কেটে গরুর নাইন্দে খাদ‍্য হিসেবে দিচ্ছি। এই দামে কাঠাল বেচে পড়তা হয়।

আরেক বাগানি আমজাদ হোসেন বলেন,গাছে প্রচুর কাঠাল ধরেছে। গাছের কাছে ব্যাপারী গেলে ঘুরে আসছে। নেওয়ার লোক নাই ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের কাঠাল দাম বলছে কম এখন গাছেই কাঠাল পেকে পোচে যাচ্ছে।

ইউপি সদস‍্য শাহিন আহমেদ বলেন,

এত বড় বড় কাঠাল গাছে পেকে পড়ে নষ্ট হচ্ছে গরুকে খাওয়াইছি। নেয়ার লোক নাই ২০ টাকা ৩০ টাকা দাম বলছে। এখন কি হবে নষ্ট হচ্ছে পচে। অথচ এই কাঠাল এমন একটি ফল যার পাতা থেকে শুরু করে সবকিছুর ব‍্যাবহার হয়। তাছাড়া একটি সময় ছিলো প্রতিটি বাড়িতেই কাঠাল গাছ ছিলো। বতর্মানে তেমনটির আর দেখা মিলছে না। বরং এখন কাঠাল বাগান কেটে ফেলা হচ্ছে।

বিধবা রওশনারা বলেন,বাগানে কাঠাল পড়ে আছে নেয়ার লোক নাই। গরু ছাগলে খাইছে মানুষ খাইছে না। পাকা কাঠাল পইড়ি নষ্ট হইছে।

কাঠাল বিক্রেতা রইচ উদ্দিন বলেন,গত বার যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ২০ টাকা করে। আর আমাদের খরচ যোগ হচ্ছে ১০ টাকা। অথচ সেই কাঠাল হাটে বিক্রি করতে গেলে ২০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে না। আবার কিছু বাগান মালিক আছে কম দামে কাঠাল বিক্রি না করে ঘাসের বিকল্প হিসেবে গরু ছাগলকে খেতে দিচ্ছে।

আমরা যে ১০ টাকা লাভ করবো তা করতে পারছিনি। বাগান থেকে ঘুরতে হচ্ছে ওখানে বেচতে পারছিনি।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সামসুল আলম বলেন, মেহেরপুর জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে কাঠাল বাগান আছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন। যে পরিমান উৎপাদন হয়েছে সে পরিমান চাহিদা নেই। মেহেরপুরে বাজার না থাকার কারনে কাঠাল বিপনন করতে সমস্যা হচ্ছে। এই ব্যাপারে কৃষি বিপনন কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং ডিসির সাথে কথা বলেছি এখানে স্থানীয় ভাবে বাজার করা যায় কি না। যদি করা যায় তাহলে সমস্যা থাকবে না। আমরা কৃষদের পরামর্শ দেব, দেশের যে এলাকায় কাঠালের চাহিদা আছে সেখানে বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবে।

এ বিভাগের আরো খবর